ভবিষ্যত আক্রমণ মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
মহাকাল ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। কিন্তু যদি বাংলাদেশ কখনো ভবিষ্যতে আক্রমণের সম্মুখীন হয় তা মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা আমরা অর্জন করতে চাই। সমুদ্রসীমা রক্ষার জন্য নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলছি।’
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বানৌজা ওমর ফারুক, আবু উবাইদাহ, প্রত্যাশা, দর্শক ও তল্লাশি -এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে বলিয়ান করে। আমরা হয়তো ভবিষ্যতে অন্য দেশের জন্য জাহাজ তৈরি করতে পারবো। ধীরে ধীরে আমরা সে সক্ষমতা অর্জন করব।’
পাঁচটি যুদ্ধ জাহাজ নৌবাহিনীতে সংযোজন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে জাহাজ তৈরির কাজ নৌবাহিনীর হাতে দেওয়া হয়েছে। ফলে নিজেরাই জাহাজ তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছি। পাঁচটি অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ আমরা আজকে নৌবাহিনীতে সংযোজন করতে পারলাম। সে সঙ্গে চীন থেকে তৈরি আধুনিক সমরাস্ত্র যুদ্ধ জাহাজ এবং আমাদের তৈরি জাহাজ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশকে আরো জোরদার করবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘নোৗবাহিনীর যাত্রা শুরু মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন। সে সময় যারা এ বাহিনীর সদস্য ছিলেন, ঝুঁকি নিয়ে তারা যুদ্ধে অংশ নেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের স্বপ্ন ছিল নৌবাহিনীর ঘাঁটি এ ভূখণ্ডে হবে। স্বাধীনতার পর যখন তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে আবার নতুন করে গড়ে তোলেন, তখন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন। সে সময় থেকে নৌবহিনীর যাত্রা শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘সমুদ্রসীমায় দেশের যে অধিকার আছে, তা আদায়ে ১৯৭৪ সালে আইন করা হয়। জাতির পিতাকে যারা হত্যা করেছিল, তারা কখনো এসব চিন্তা করেনি। আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে তখন আবার সমুদ্রসীমা রক্ষায় কাজ শুর করে। ধীরে ধীরে আমরা সেই সমুদ্রসীমা অর্জন করি। ব্লু-ইকোনমির ধারণা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। সমুদ্রের সম্পদ কাজে লাগানোর লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনের প্রয়াস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তাই দক্ষ ও শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নিয়েছি। উন্নত সাবমেরিন, উন্নত জাহাজ ও বিশেষায়িত ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনের প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যে জাহাজগুলো কমিশনিং করা হলো, সেগুলোর মাধ্যমে আমাদের নৌবাহিনী আরো শক্তিশালী এবং দক্ষ হবে। নৌবাহিনী তার অগ্রযাত্রায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। দিনটি শুধু বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য নয়, দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত গৌরবের।’
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত নৌবাহিনী
সরকারপ্রধান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে নৌবাহিনী যথাযথ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং মানুষকে সাহায্য করে থাকে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নৌবাহিনী বিপুলভাবে প্রশংসিত পেশাদার একটি বাহিনী। ২০১০ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে আমাদের যুদ্ধ জাহাজ সার্বক্ষণিকভাবে অংশগ্রহণ করছে।’