ঝিনাইদহে রিপন হত্যা : ভাবির স্বীকারোক্তি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১৯:৩২ |
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কৃষক রিপন বিশ্বাস (৩৪) হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন রিপনের মেজো ভাই রান্নু বিশ্বাসের স্ত্রী ফরিদা খাতুন। বৃহস্পতিবার বিকালে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এ জবানবন্দী দেন তিনি।
এ ঘটনায় রিপনের মেজো ভাই রান্নু পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। রিপন বিশ্বাস উপজেলার ১২ নং নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের চররুপদা গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক বিশ্বাসের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শিহাব উদ্দিন জানান, পারিবারিক কলহ ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহত রিপনকে তার মেজো ভাই রান্নু ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন মিলে এ হত্যা করে বলে আদালতে স্বীকার করেন আটক রান্নু বিশ্বাসের স্ত্রী।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনার দিন রিপনের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ভাই ও ভাবি মিলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই বাড়ির পাশের একটি ডোবার কাদার মধ্যে রিপনের মরদেহ পুতে রাখে বলে স্বীকার করে। সকালে তাদের দোষ ঢাকতে রিপনের গায়ের চাদর ও ব্যবহৃত ফোন ধান ক্ষেতে পাওয়া গেছে বলে প্রচার করে।
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর বুধবার রাত থেকে রিপন নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজের সাতদিন পর বুধবার সকালে নিহতের বাড়ির পাশের একটি পতিত ডোবার মধ্যে কাদা মাটি চাপা অবস্থায় তার অর্ধগলিত মৃতদেহ পাওয়া যায়। এদিকে নিখোঁজের পরের দিন ১০ ডিসেম্বর নিহতের ভগ্নীপতি নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। নজরুল ইসলাম ডায়েরীতে উল্লেখ করেন, আমার শ্যালক রিপন একজন কৃষক। গত ৯ ডিসেম্বর বুধবার রাত ৯ টার দিকে সে বাড়ির পাশের মাঠে ধান পাহারা দিতে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। অনেক খোজাখুজি করেও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে পরের দিন ধান ক্ষেতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ও চাদর পাওয়া যায়।
নিহতের চাচাতো ভাই মিজানুর রহমান বাবু জানান, রিপন নিখোঁজের দুই পর থেকে তার ভাই রান্নু বিশ্বাসআত্মগোপনে চলে যায়। এরপর তার স্ত্রী পরিবারের সদস্যরা প্রচার করে তাকেও কেউ মেরে ফেলতে পারে।
বাবু আরো জানান, আমার বাবা ২০০৫ সালে ২০ সেপ্টেম্বর রাতে খুন হয়। রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কয়েকজন এসে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশে হত্যা করে। সে সময় আমার বাবা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মেম্বার ছিলেন। সে মামলার আসামি ছিল নিহত রিপনসহ তার পরিবারের আরো পাঁচজন। এর কিছুদিন পর সামাজিক চাপে মামলা তুলে নেওয়া হয়। ফলে রিপন ও রান্নু দুই ভাই নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ আমাদের সন্দেহ করে। রিপনের মরদেহ পাওয়ার একদিন আগেও আমাদের তিন ভাইকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে।